কালহাতীতে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ
শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৪৭

:: কালিহাতী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি ::
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ৬ষ্ঠ শ্রেণী পড়ুয়া স্কুলছাত্রী এক কিশোরীকে (১৩) ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে প্রতিবেশী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। উপজেলার কোকডহড়া ইউনিয়নের আগচারান গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম (৪৫) একই এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী নজরুলের স্ত্রীর বিরুদ্ধেও ধর্ষণে সহায়তা ও ভাইকে হত্যার হুমকির অভিযোগ করেছেন কিশোরী। এবিষয়ে কালিহাতী থানায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়েছে।
নির্যাতিতা কিশোরী বলেন, গত রমজানের মাঝামাঝিতে নজরুলের স্ত্রী কিছু পেয়াজ ও রসুনের খোসা ছাড়াতে ডাকেন। একটি কক্ষে খোসা ছাড়াতে দিয়ে সে আরও পেয়াজ-রসুন আনতে যান। এসময় নজরুল রুমে ঢোকে দরজা লাগিয়ে দিয়ে জোরপূর্বক আমার সম্মানহানি করে। সেসময় নজরুলের স্ত্রী বাড়িতে থেকেও বাঁধা না দিয়ে উল্টো আমার ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বলে। রমজানের পরে আরও একবার ডেকে নিয়ে একই হুমকিতে দ্বিতীয়বার সম্মানহানি করে। এঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরী, তার মা ও ভাই দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি করেন।
ভুক্তভোগী কিশোরীর ভাই ও এলাকার অনেকে অভিযোগ করেন, নজরুল ইসলাম ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার নেতৃস্থানীয়রা মোটা অঙ্কের সুবিধা নিয়ে বিষয়টি ভিন্নখাতে নেয়ার ও ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন।
কোকডহড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় রায়হান আলী খান রুনু আলাপকালে এবিষয়ে বলেন, নজরুল দুই বিয়ে করলেও দুজনকেই তো সমঅধিকার দিয়েছেন। তৃতীয় বিয়ে করেনি, করলেও জানা নেই। তবে, দ্বিতীয় বিয়ে কিভাবে করেছেন তা বলতে পারেননি তিনি। ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার ভালো না, তাদের তিন আত্মীয়-স্বজনের এরকম ঘটনাও আছে। স্থানীয় সামাজিক নেতৃবৃন্দরা বিষয়টি প্রতিকারের চেষ্টা করেছেন।
প্রতিবেশী নুরুল ইসলাম (৩৯) ও কালুসহ (৪১) ৮-১০জন নারী ও পুরুষের সাথে আলাপকালে জানা যায়, অভিযুক্ত নজরুল ১০-১২ বছর আগে উপজেলা সদরে পোল্ট্রি ফিডের ব্যবসা করার সময় অনেকের টাকা মেরে পালিয়ে যায়। পরে সে ঢাকায় নিজের নামে ট্রাফিক কমিশন ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা শুরু করেন। এতে সে অল্পদিনে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়ে শিল্পপতি বনে যান। ঢাকাতেও সে এরকম ঘটনা ঘটিয়ে দুটি বিয়ে করেছেন। আলাপকালে সকলেই ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বার বিষয়ে দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান। কেউ কেউ এ ঘটনায় প্রকৃত দোষীকে বা দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিও জানান।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়েও পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। এক আত্মীয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সালমা জাহান জানান, মেডিকেল পরীক্ষায় কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। মেয়েটি চারমাসের অন্তঃসত্ত্বা।
পুলিশের টাঙ্গাইল আদালত পরিদর্শক মো. তানভীর আহমেদ জানান, গতকাল বুধবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেশকে জান্নাত রিপা কিশোরীর জবানবন্দি গ্রহন করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কালিহাতী থানার উপপরিদর্শক মো. সাজ্জাদ জানান, আমরা অভিযুক্তকে আটকে দিন-রাত চেষ্টা করে যাচ্ছি। অতিদ্রুত সময়ে আটক করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। তাঁর বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে।
এমএসি/আরএইচ